ঢাকা,বুধবার, ৬ নভেম্বর ২০২৪

চকরিয়ায় হালনাগাদে নতুন ভোটার ১২ হাজার ১৯২জন

votarএম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া :::

নির্বাচন কমিশনের ঘোষনা মতে গত ২৫ জুলাই থেকে শুরু হওয়া হালনাগাদ কার্যক্রমের শেষদিন ৯ আগষ্ট পর্যন্ত ১৬দিনে চকরিয়া উপজেলার ১৮টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এলাকায় প্রথমধাপে নতুন ভোটার হয়েছেন ১২ হাজার ১৯২জন। তারমধ্যে নতুন ভোটার হয়েছেন ৬ হাজার ৯৯১জন পুরুষ ও ৫ হাজার ৫০১জন নারী। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা অভিযোগ করেছেন, ফরম সংকটের কারনে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে আরো অন্তত ১০ হাজার নারী-পুরুষ জীবনের প্রথম ভোটার হতে বঞ্চিত হয়েছেন।

তবে জনপ্রতিনিধিদের দাবি প্রত্যাখান করে চকরিয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো.সাখাওয়াত হোসেন বলেন, সরকারিভাবে চকরিয়া উপজেলায় ৩ দশমিক ৫ ভাগ হারে (সাড়ে ৯ হাজার জনকে) ভোটার করার কথা থাকলেও আমরা ভোটার করেছি ৪ দশমিক ৫ভাগ হারে (১২ হাজার ১৯২জনকে)। এত পরিমাণ নতুন ভোটার করার পরও ফরম না থাকার কারনে বর্তমানে তালিকায় অর্ন্তভুক্ত রাখা হয়েছে আরো ৩ হাজার ৯৭৫জন ভোটারকে। আগামী জানুয়ারী মাসে শুরু হওয়া দ্বিতীয়ধাপের হালনাগাদ কার্যক্রমে তাদেরকে ভোটার করা হবে।

চকরিয়া উপজেলা নির্বাচন অফিসের সহকারি কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত ২৫ জুলাই থেকে ৯ আগষ্ট তারিখের প্রথমধাপের হালনাগাদ কার্যক্রমে চকরিয়া উপজেলায় ১২ হাজার ১৯২জন নতুন ভোটার হয়েছেন। তারমধ্যে বমুবিলছড়ি ইউনিয়নে ২৫৪জন, সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়নে ৩১৯জন, কাকারা ইউনিয়নে ৫৮৬জন, লক্ষ্যারচর ইউনিয়নে ২৬২জন, কৈয়ারবিল ইউনিয়নে ৫৩৩জন, বরইতলী ইউনিয়নে ৮৬৩জন, হারবাং ইউনিয়নে ৮১২জন, ফাসিয়াখালী ইউনিয়নে ৭৯৪জন, ডুলাহাজারা ইউনিয়নে ১০১৮জন, খুটাখালী ইউনিয়নে ৮০৭জন, চিরিঙ্গা ইউনিয়নে ৪০৩জন, সাহারবিল ইউনিয়নে ৫৫০জন, পুর্ববড় ভেওলা ইউনিয়নে ৭১৫জন, পশ্চিম বড়ভেওলা ইউনিয়নে ২৪৩জন, বদরখালী ইউনিয়নে ৮০৮জন, ঢেমুশিয়া ইউনিয়নে ২৫০জন, কোনাখালী ইউনিয়নে ৫১৯জন, বিএমচর ইউনিয়নে ৫২৯জন। অপরদিকে চকরিয়া পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে নতুন ভোটার হয়েছেন ১ হাজার ৯৬৭জন। তৎমধ্যে পৌরসভার ১নম্বর ওয়ার্ডে ২০৫জন, ২নম্বর ওয়ার্ডে ২০৫জন, ৩নম্বর ওয়ার্ডে ২১০জন, ৪নম্বর ওয়ার্ডে ২০৫জন, ৫নম্বর ওয়ার্ডে ২৬৪জন, ৬নম্বর ওয়ার্ডে ২০১জন, ৭নম্বর ওয়ার্ডে ২৪৮জন, ৮নম্বর ওয়ার্ডে ১৭৮জন ও ৯নম্বর ওয়ার্ডে ২১১জন।

উপজেলার সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক আজিমুল হক আজিম বলেন, নির্বাচন কমিশনের হালনাগাদ কার্যক্রমে আমার ইউনিয়নে ৩১৯জন নতুন ভোটার হয়েছে। কিন্তু ফরম সংকটের কারনে ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ডে অন্তত ৫ থেকে সাতজন নারী-পুরুষ ভোটার হতে পারেনি। এতে নতুন প্রজন্মের ভোটারদের মাঝে হতাশা বিরাজ করছে। এ অবস্থার উত্তোরনে আগামীতে ফরম সংকটের বিষয়টি আমলে নিয়ে হালনাগাদ কার্যক্রম শুরু করতে হবে।

ফরম সংকটের একই অভিযোগ করেছেন বুমবিলছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মতলব, কাকারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শওকত ওসমান, কৈয়ারবিল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মক্কী ইকবাল হোসেন, কোনাখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দিদারুল হক সিকদার, বিএমচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম জাহাংগীর আলমসহ বেশির ভাগ জনপ্রতিনিধি।

চকরিয়া পৌরসভার সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর রাশেদা বেগম বলেন, প্রতিটি এলাকায় নতুন প্রজন্মের ভোটার সংখ্যা বেড়েছে। সেই তুলনায় নির্বাচন কমিশন হালনাগাদ কার্যক্রম ফরম বিতরণ করেনি। এ অবস্থার কারনে অনেকে ইচ্ছা প্রকাশ করেও এবার ভোটার হতে পারেনি।

চকরিয়া পৌরসভার ১নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মকছুদুল হক মধু ও ২নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রেজাউল করিম বলেন, দীর্ঘদিন বিদেশে থাকার কারনে অনেকে ভোটার হতে পারেনি। তবে হালনাগাদ কার্যক্রম শুরু হলে অনেকে দেশে আসেন ভোটার হতে। কিন্তু ফরম সংকটের কারনে অনেকে শত চেষ্ঠা করেও ভোটার হতে ব্যর্থ হয়েছেন। একই ভাবে নতুন প্রজন্মের নারী-পুরুষ এবার ভোটার হতে চেষ্ঠা করেছেন। কেউ কেউ সফল হলেও অনেকে ফরম সংকটের কারনে জীবনের প্রথম ভোটার হওয়ার খায়েশ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।

চকরিয়া পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক আলমগীর চৌধুরী বলেন, নির্বাচন কমিশনের হালনাগাদ কার্যক্রমে পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে ১৯৬৭জন নতুন ভোটার হয়েছেন। তবে স্থানীয় কাউন্সিলরদের দেয়া তথ্য মতে ফরম সংকটের কারনে পৌরসভার কয়েক হাজার তরুন-তরুনী নতুন ভোটার হতে পারেনি। আগামীতে এ ধরণের সংকট সমাধানে নির্বাচন কমিশনকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।

চিরিঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও চকরিয়া উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি জসীম উদ্দিন জানিয়েছেন, প্রথমধাপের হালনাগাদে তাঁর ইউনিয়নে ৪০৩জন নতুন ভোটার হয়েছেন। তবে ফরম সংকটের কারনে ইউনিয়নের অন্তত এক হাজার নতুন প্রজন্মের নারী-পুরুষ এবার ভোটার হতে পারেনি। #

পাঠকের মতামত: